বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবীতে শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি
প্রকাশিত : ২০:৪২, ১৫ আগস্ট ২০১৮
ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় এক কারখানার বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস ও বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে কারখানার শ্রমিকরা।
আজ বুধবার বাঁধন কর্পোরেশন লিমিটেড নামের ওই কারখানার ভিতরে অবস্থান কর্মসূচিসহ সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।
এ ঘটনায় কারখানার ভেতরে মালিকপক্ষের এক কর্মকর্তাসহ কারখানার পাঁচ স্টাফকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে শ্রমিকরা।
তবে বিজিএমইএ’র সাথে বৈঠকের মাধ্যমে এই সংকট নিরসন হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন কারখানা কতৃপক্ষ।
বুধবার সকাল থেকে জামগড়া এলাকার মেসার্স বাঁধন করপোরেশন লিমিটেড নামে কারখানার কয়েক’শ শ্রমিক এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামান্না ইসাবেলা বাঁধন-এর উপদেষ্টা নূর উদ্দিন জানান, বিগত এক বছর ধরে শুধু সাব-কন্ট্রাক্টের কাজ থাকায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা ভর্তুকি গুণতে হচ্ছিল মালিককে।
গত জুন মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হলেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ফলে সাব-কন্ট্রাক্টের প্রায় ৮০ হাজার কাজ নির্দিষ্ট সময় শেষ করার জন্য তাদের বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত খরচ করে জেনারেটর চালাতে হয়েছে।
কিন্তু জুলাই মাসের ১০ তারিখ শ্রমিকরা বকেয়া জুন মাসের বেতনের দাবিতে কাজ বন্ধ করে দিয়ে কারখানায় কর্মবিরতি পালন করে।
ফলে সার্বিক দিক দিয়ে বিপাকে পড়েন কারখানার মালিক। এসময় তিনি শ্রমিকদের ২০ জুলাই বেতন পরিশোধ করা হবে বলে কাজ বন্ধ না রাখতে অনুরোধ করলেও এতে লাভ হয়নি।
পরবর্তীতে উপায়ন্তু না পেয়ে মালিক কারখানাটি বন্ধ করতে বাধ্য হন। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মালিকের নির্দেশে শ্রমিকদের জুন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য তিনি ও পাঁচ জন স্টাফ কারখানায় আসেন।
কিন্তু শ্রমিকরা এক মাসের বেতন না নেওয়ার কথা জানিয়ে জুলাই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে তাদের কারখানার অফিস কক্ষে আটকে রাখে।
তিনি আরো জানান, বিজিএমইএ’র সাথে আজকের বৈঠকের মাধ্যমে শ্রমিকদের সমস্ত পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়টি সুরাহা হবে বলে আশ্বাস দেন।
এদিকে কারখানার সামনে অবস্থান নেওয়া শ্রমিকরা জানায়, টাকার অভাবে তাদের বাসা ভাড়া ও দোকানের টাকা বাকী পড়েছে। সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে বর্তমানে দেয়ালে তাদের পিঠ ঠেকে যাওয়ার অবস্থা।
এখন তারা যখন উপায়ন্তু না পেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন তখন কেবল জুন মাসের বকেয়া পরিশোধ করা হবে বলে মালিক লোক পাঠিয়েছে।
কিন্তু এত দিন কর্মহীন অবস্থা পার করার পর সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে তারা পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বলেও জানান শ্রমিকরা।
তাই তাদের বকেয়া তিন মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসসহ বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার ছানা শামিনুর রহমান শামীম জানান, যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানার অভ্যন্তরে শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
এছাড়া বিকেলে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএ’র বৈঠকের পর শ্রমিকরা তাদের পাওনা বুঝে পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুন মাসের বকেয়া বেতনের জন্য গত ৩১ জুলাই কারখানার সামনে প্রথম অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শ্রমিকরা। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ থাকায় গত ১৪ আগস্ট টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা।
এমএইচ/এসি
আরও পড়ুন